শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় ফরমফিলাপের টাকা বাকি থাকায় চলমান দাখিল পরীক্ষার এক ছাত্রীর পরীক্ষার প্রবেশপত্র কেড়ে নিয়ে হল থেকে বের করে দিলেন মাদ্রাসার সুপার। এতে ওই ছাত্রীর জীবন থেকে নষ্ট হয়ে গেল মূল্যবান একটি বছর। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার দিনমজুর বাবা পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন আগামী তিন দিনের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ভাণ্ডারিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার নদমূলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দিনমজুর মনির কবিরাজের মেয়ে সারমিন আক্তার (পরীক্ষার রোল নং-২৯৪৪১০) এ বছরের দাখিল পরীক্ষার্থী। রেজিস্ট্রেশনের ২ হাজার ৮শ’ টাকার মধ্যে পরীক্ষার্থী সারমিন ২ হাজার টাকা জমা দেয়। বাকি টাকা পরীক্ষার ১২ দিনের মধ্যে দেয়ার শর্তে তাকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়। কিন্তুচার দিন বাকী থাকার পরেও নদমূলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. অলিউর রহমান পরীক্ষার ৪র্থদিন রোববার আরবি ২য়পত্রের পরীক্ষা আল গাযযালী কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে চলাকালীন সময় পরীক্ষার্থী সারমিনের প্রবেশপত্র কেড়ে নিয়ে বলেন বকেয়া টাকা দিতে পারিস নাই, তোর আর জীবনে পরীক্ষা দেয়ার প্রয়োজন নেই; সোজা বাড়ি চেলে যা। ছাত্রী এ সময় সুপারের পা জড়িয়ে কান্নাকাটি করলেও সুপারের মন এতটুকু গলেনি। পরে ছাত্রী মর্মাহত হয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান খোকনের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। তিনিও পরীক্ষার্থীকে তিরস্কার ও ভৎসনা করে বাড়ি চলে যেতে বলে।
ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য মো. জিয়াউল হক সম্রাট বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসা সুপার টাকার লোভে এ ধরনের জঘন্য কাজ করায় তার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থী সারমিন আক্তার পিতা মনির কবিরাজ জানান রবিবার প্রবেশপত্র নেয়ার পরে সোমবার পরীক্ষা না থাকায় আমি সুপারের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্র দেয়ার অনুরোধ করলে তিনি তা দেয়নি। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যাওয়ার কথা বললে সুপার আমাকে বলে যা পারো করো, আমি প্রবেশপত্র দিব না।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসার সুপার মো. অলিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমি প্রবেশপত্র নেই নাই। মাদরাসার কমিটির নিয়ে অনেক দিন দ্বন্ধ রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় মাদরাসার কমিটির কছিু সদস্য আমাকে ফাঁসানোর জন্য স্বরযন্ত্র করছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আলম জানান, শিক্ষার্থী সারমিন আক্তারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।